এসইও কি – যে ৫ কারণে আপনার ওয়েবসাইট এসইও করা দরকার (SEO)

এসইও – রহস্যময় এই পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকার লড়াইটা যেন রহস্যজনক ভাবে বেড়েই চলেছে। প্রতিটি মানুষই প্রতিনিয়ত বড় হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। তেমনই ইন্টারনেটের জগতে নিজের ওয়েবসাইট টি কে সার্চ ইঞ্জিনে সবার আগে র‍্যাংক করাতে কে না চায়। আপনার নিজের ওয়েবসাইট টি কে পাকা-পোক্তভাবে টিকিয়ে রাখতে চাইলে আজই SEO এর দিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

কারণ আপনার ওয়েবসাইট এসইও যত ভালো হবে আপনি তত ভালো ভাবে আপনার কাস্টমার এর কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং আপনার ওয়েবসাইট টি দীর্ঘমেয়াদে সার্চ ইন্জিনে র‌্যাংক ধরে রাখবে। তাই আপনার ওয়েবসাইট টির যদি SEO করা না থাকেেএর দিকে গুরুত্ব না দিয়ে থাকেন তাহলে আজই SEO নিয়ে কাজ শুরু করে দিন। এই পুরো আর্টিকেল টা পড়লে আপনি জানতে পারবেন যে ৫ কারণে আপনার ওয়েবসাইট এসইও করা দরকার, কিভাবে এবং কোথা থেকে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য এসইও করাবেন ইত্যাদি  বিষয়।

এসইও কি

এসইও কি? SEO এর পূর্ণ অর্থ হলো (search engine optimization) অর্থাৎ এটি একটি প্রসেস যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট টিকে যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ রেজাল্ট পেজে স্থান দিতে পারবেন। অর্থাৎ এস.ই.ও করার ফলে আপনার ওয়েবসাইট এর ফ্রি/অর্গানিক অথবা ন্যাচারাল ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে প্রায় ৪ কোটির বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। এবং প্রায় ৯৪ শতাংশ ভিজিটরই গুগলের প্রথম পেজে প্রদর্শিত ওয়েবসাইট গুলোর কন্টেন্ট পড়ে থাকে।

আপনার ওয়েবসাইট টি যদি গুগল সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে সাবমিট না করে থাকেন তাহলে কোনভাবেই গুগল জানতে পারবেনা যে আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে। যার ফলে আপনার ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলো কোন ভিজিটরদের নজরে আসার সম্ভাবনা নেই।  তাহলে বুঝতেই পারছেন ওয়েবসাইট এস.ই.ও করার গুরুত্ব কতটা! যে ৫ টি কারণে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটটি কে এস.ই.ও ফ্রেন্ডলি করতে হবে তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ওয়েবসাইট এর পরিচিতি বৃদ্ধির জন্যঃ

ধরুন আপনার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়েবসাইট বানানো থেকে শুরু করে পণ্য সামগ্রী দিয়ে আপনি লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ইনভেস্ট করে ফেলেছেন। কিন্তু আপনি তেমন কাস্টমার পাচ্ছেন না। এর পেছনের কারণ হলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটটি এস.ই.ও সার্চ ইঞ্জিন থেকে তেম গুরুত্ব পাচ্ছে না।

তাই আপনার ওয়েবসাইট টি ও গুগলের প্রথম পাতায় শো হচ্ছে না। এতে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট টির পরিচিতি লাঘব হচ্ছে। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটটির জন্য গুগলের র‍্যাংকিং অ্যালগরিদম গুলো মেনে এসইও করান তাহলে যখন কেও একটি কিওয়ার্ড গুগলে লিখে সার্চ করবে তখন সেই কিওয়ার্ড টি যদি আপনার ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট এ থাকে তাহলে গুগল আপনার ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট টাই আগে শো করবে। একটা উদাহরণ এর মাধ্যমে বিষয়টি কে আরও ক্লেয়ার করা যাক।

আপনার যেহেতু একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে সেহেতু একজন ভিজিটর যদি আপনার ওয়েবসাইট এর কোনো প্রোডাক্ট লিখে গুগল এ সার্চ করে তাহলে আপনার ওয়েবসাইট এর প্রোডাক্ট টিই গুগল সবার প্রথমে শো করবে যদি আপনার ওয়েবসাইট টি এস.ই.ও করা থাকে। আপনার ওয়েবসাইট টি গুগলের প্রথম পাতায় র‍্যাংক করার ফলে দিন দিন আপনার ভিজিটর বেড়েই যাবে এর ফলে আপনার প্রোডাক্ট গুলোর সেল বাড়তে থাকবে। আর সেল বাড়তে থাকলে আপনার ওয়েবসাইট এর পরিচিতি ও দ্রুত  বৃদ্ধি পাবে। তাহলে ভাবুন একটা ওয়েবসাইট কে এসইও করা কত জরুরি!

অর্গানিক ভিজিটর পাওয়ার জন্যঃ

আপনার ওয়েবসাইটটি কে এসইও ফ্রেন্ডলি করলে আপনার ওয়েবসাইটের অর্গানিক ভিজিটর দিন দিন বাড়তে থাকবে। অর্গানিক ভিজিটর এর মাধ্যমেই নির্ধারণ করা হয় আপনার ওয়েবসাইট টি কতদিন টিকবে। আপনার ওয়েবসাইট টি তে অর্গানিক ভিজিটর যত বৃদ্ধি পাবে আপনার ওয়েবসাইট টি ও তত দীর্ঘস্থায়ী হবে। এটা অনেকটা ওয়েবসাইটের পরিচিতির উপর ও ডিপেন্ড করে।

এস.ই.ও করার পর আপনার ওয়েবসাইট টি গুগলের প্রথম পাতায় র‍্যাংক করবে এবং আপনার ওয়েবসাইট টির পরিচিতি দিন দিন বাড়বে। এর ফলে আপনা-আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর অর্গানিক ভিজিটর এর সংখ্যা ও বৃদ্ধি পাবে। আর একবার আপনার ওয়েবসাইটটি কে ভালো মত দাড় করাতে পারলে আপনাকে আর পিছু ফিরে  তাকাতে হবে না, আপনি সারাজীবন ওয়েবসাইট থেকে বেনিফিট পাবেন। ধরুন আপনি কয়েক বছর ধরে অনেক কাঠ খর পুরিয়ে একটি বাড়ি বানানোর জন্য টাকা জমালেন। বাড়িটাকে মজবুত করার জন্য মাটির নিচের কন্সট্রাকশন এর কাজটা যত ভালো হবে আপনার বাড়িও তত দিন বেশি টিকবে।

যখন বাড়িটা হয়ে গেলো তখন কিন্তু আপনার আর কষ্ট থাকবে না। আপনি বাসা ভাড়া দিয়েই সব টাকা উশুল করতে পারবেন বছরের পর পর। ওয়েবসাইট কে এস.ই.ও করাও বাড়ির ভিত্তি মজবুত করার মতোই। আর এস.ই.ও করার ফলে পরিচিতি বাড়বে। পরিচিতি বাড়ার ফলে অর্গানিক ভিজিটর এর সংখ্যাও বাড়বে। বেপারটা অনেকটাই একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে এর মূলে যে জিনিস টা মূখ্য ভূমিকা পালন করে সেটি হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বা এস.ই.ও।

 

লোকাল বিজনেস প্রমোশনের জন্যঃ

টাকা খরচ করে বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় ( ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম) আপনি আপনার বিজনেস এর বিজ্ঞাপন বুস্ট করে সবার কাছে পৌঁছাতে পারবেন কিন্তু যখন বুস্ট করা বাদ দিবেন তখন আপনার বিজনেসের বিজ্ঞাপন ও আড়ালে পরে থাকবে। কিন্তু আপনার বিজনেস এর যদি একটা ওয়েবসাইট থাকে আর সেটা কে যদি একবার এস.ই.ও ফ্রেন্ডলি করেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট এর অর্গানিক ভিজিটর বাড়বে। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট টি হবে দীর্ঘস্থায়ী। এতে আপনার বার বার বুস্ট করার মত পে করতে হবে না। ফলে আপনার লোকাল বিজনেসের প্রমোশন দিন দিন বাড়তেই থাকবে।

দীর্ঘমেয়াদে ফ্রি মার্কেটিং এর জন্যঃ

একটা উপমার সাহায্যে বিষয় টি তুলে ধরা যাক। ধরুন আপনার বাবার, শহরে একটি ২ তালা দোকান আছে। উনি দোকান টা আপনার নামে করে গেছেন। আর এখন আপনি বসে বসে ভাড়া তুলছেন। এস.ই.ও এর বেপারটাও ঠিক এরকমই। একবার এস.ই.ও করলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত আপনি ফ্রি মার্কেটিং করতে পারবেন। আর যত দিন যাবে আপনার মার্কেটিং ও যত ভালো হবে। কারণ একবার ওয়েবসাইট র‍্যাংক করলে তা ডাউন হয় না বললেই চলে। আর আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিজনেস করলে আপনার বিজনেস টা কখনোই এতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

প্রোডাক্টসের বিক্রয় বাড়ানোর জন্যঃ

উপরের টপিক গুলোর সাথে এই টপিক টা একদম রিলেটেড। আপনার ওয়েবসাইটটি কে যখন আপনি এস.ই.ও ফ্রেন্ডলি করলেন তখন অটোমেটিকলি আপনার ওয়েবসাইট টি গুগল এর প্রথম পাতায় স্থান পাবে। কোন ব্যাক্তির কুয়েরি অনুযায়ী কিওয়ার্ড সার্চ করলে যদি সেটি আপনার ওয়েবসাইট এর কিওয়ার্ড এর সাথে মিলে যায় তাহলে স্বভাবতই সে আপনার ওয়েবসাইট টি তেই ঢুকবে ।

এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট টি প্রচুর অর্গানিক ভিজিটর পাবে এবং আপনার ওয়েবসাইট টির পরিচিতি ও বাড়বে। এর ফলে ওয়েবসাইট টি দীর্ঘস্থায়ী ও হবে। ফলে আপনার ওয়েবসাইট এর বিক্রয় ও দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। প্রোডাক্ট বিক্রয় বাড়ানোর জন্য WEBSITE SEO করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। এস.ই.ও না করলে আপনার ওয়েবসাইট টি গুগলের একদম শেষে গিয়ে থাকবে। ফলে ভিজিটর ও বাড়বে না আর প্রোডাক্ট সেল হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।

Leave a Comment